প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারী, ২০১৯ ০৪:২০:৩৮
গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে মহাজোটের নিরঙ্কুশ বিজয়ে বিরোধী দল গঠন নিয়ে এক প্রকার অস্বস্তিতে ছিল ক্ষমতাসীনেরা। একাদশ জাতীয় সংসদে শক্তিশালী ও কার্যকর বিরোধী দল চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নানা আলোচনার পর মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি (জাপা) সরকারে যোগ না দিয়ে বিরোধী দলে থাকতে সম্মত হওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছে সরকারি দল। তবে কোনোভাবেই অতীতের মতো গৃহপালিত বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টিকে দেখতে চায় না আওয়ামী লীগ।
দলটির শীর্ষ নেতারা মনে করেন, জাতীয় পার্টি এখন সংসদের প্রধান বিরোধী দল। তবে সংসদকে প্রাণবন্ত করে তুলতে জাতীয় পার্টির পাশাপাশি বিরোধীদলের ভূমিকায় জোটের শরিক দলগুলোকেও দেখতে চায় আওয়ামী লীগ। সেজন্যই নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় জোটের শরিক দলগুলোর কাউকেই যুক্ত করা হয়নি। এ নিয়ে কিছু আলোচনা সামনের দিকে এগোচ্ছে বলে দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায় সূত্রে জানা গেছে।
একাধিক নেতার সাথে আলাপকালে জানা গেছে, গত নির্বাচনে তারা বিএনপিকে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের অবস্থানে চেয়েছিল। আওয়ামী লীগ মনে করেছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৫০ থেকে ৬০টি আসনে বিজয়ী হতে পারবে। কিন্তু তারা বিরোধী দলে থাকার মতো পর্যাপ্ত আসন পায়নি। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। নির্বাচনে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি। ফলে জাতীয় পার্টিকে সংসদে শক্তিশালী ও কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা রাখার জন্য গতবারের মতো এবার আর কোনো মন্ত্রণালয় দেয়া হয়নি।
সরকারের গঠনমূলক সমালোচনার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসা করলে সংসদ প্রাণবন্ত হয়ে ওঠবে। এজন্য জোটের শরিকদলগুলোকে বিরোধী দলের সাথে ভূমিকা রাখার জন্য পরামর্শ দেয়ার চিন্তা রয়েছে। জাতীয় পার্টি শক্তিশালী ও কার্যকর ভূমিকা রেখে সংসদকে প্রাণবন্ত করে তুলবে- আওয়ামী লীগ এটা প্রত্যাশা করে।
মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি (জাপা) সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকছে বলে লিখিত আকারেও সংসদকে জানানো হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে বিরোধী দলীয় নেতা এবং জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে উপনেতার স্বীকৃতি দিয়ে সংসদ সচিবালয় বিবৃতি দিয়েছে। অন্যদলগুলোও সংসদে প্রকৃত বিরোধীদলের ভূমিকা রাখা না রাখার বিষয়ে আগ্রহ জানতে বা বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকার জন্য জোট-মহাজোটের অন্য শরিক দলগুলোর সাথে শিগগিরই আলোচনায় বসতে পারে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব।
দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানায়, মহাজোট গঠিত হওয়ার পর অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দুইবারের মন্ত্রিসভায় জোটের শরিক দলীয় নেতাদের রাখা হয়েছে। এবার নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নিলেও তাদের কেউ মন্ত্রিসভায় নেই। জোট-মহাজোট মিলিয়ে শরিকদের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন ৩১ জন। ঐক্যফ্রন্টের তুলনায় তাদের এমপির সংখ্যা চার গুণের বেশি।
রাজনৈতিক মিত্র হওয়ায় মহাজোটের শরিক দলগুলো জাতীয় সংসদে দায়িত্বশীল বিরোধী দল হবে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের শীর্ষপর্যায়ের কেউ কেউ। তা ছাড়া, ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিতরা কৌশলগত কারণে এখনো এমপি হিসেবে শপথ নেননি। তারা শেষ পর্যন্ত শপথ নেবেন কি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। জোট-মহাজোটের এমপিরা ইতোমধ্যে শপথ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে জোটের শরিকদলের এমপি সাতজন (ওয়ার্কার্স পার্টির তিনজন, জাসদ-ইনুর দুজন, তরিকত ফেডারেশনের একজন, জেপি-মঞ্জুর একজন)। মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি ও বিকল্পধারা মিলিয়ে আছেন ২৪ জন (জাতীয় পার্টির ২২ ও বিকল্পধারার দু’জন)।
দশম জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টি একসাথে সরকারে থাকা ও বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করায় অনেক সময় সমালোচনার মুখে পড়তে হয় দলটিকে। এবারো দলটির অনেকে সরকারে থাকতে চাইলেও দলের চেয়ারম্যান বিরোধী দলে থাকার ঘোষণা নির্বাচনের পরপরই দেন। জাপার এ অবস্থান ১৪ দলের অনেক নেতার পছন্দ হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সদ্য সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রিসভা নিয়ে ১৪ দলে কোনো আলোচনা হয়নি, তাই এটা কেউ জানত না। তবে সবার আশা ছিল, মন্ত্রিসভায় শরিকরা থাকবে। নিশ্চয়ই না থাকার ব্যাখ্যা শরিকদের পরে জানানো হবে।
গতবার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টি প্রকৃত বিরোধী দলের ভূমিকা রাখতে পারেনি। যার কারণে তারা জনগণের কোনো আস্থায় ছিল না। এবার যদি বিরোধী দলে থেকে জাতীয় সংসদে প্রকৃতপক্ষে শক্তিশালী ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে তাহলে তারা জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জোটের শরিকদের যারা এমপি আছেন তারাও সরকারের মন্ত্রিত্ব চায়, সরকারের সাথে থাকতে চায়। বিরোধী দলে যাবে কি না বা তাদের বিরোধী দলে রাখার ব্যাপারে জোরালো পরামর্শ দেয়া হবে কি না, এসব বিষয়ে জোটের মধ্যে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। তবে খুব শিগগিরই আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
এবার শুধু নিজের দল আওয়ামী লীগের নেতাদের সরকার পরিচালনায় রাখা হয়েছে। তবু নতুন মন্ত্রিপরিষদে ঠাঁই পাওয়ার বিষয়ে আশা হারাচ্ছেন না শরিক দলের কেউ কেউ। ক্ষমতাসীন জোটের শরিক দলের নেতারা মনে করেন, বছর খানেকের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদে পরিবর্তন ও সংযোজন হতে পারে। তখন জোটের শরিকদলগুলোকে মন্ত্রিসভায় মূল্যায়ন করা হতে পারে। তা ছাড়া, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বরাবরই জাতীয় বা ঐকমত্যের সরকার গঠিত হয়েছে। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ১৪৯ আসনে জয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে জেপির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং জাসদের আ স ম আবদুর রবের সহায়তা নিয়ে। আওয়ামী লীগ সরকারের ওই মন্ত্রিসভায় তাদের মূল্যায়ন করা হয়েছিল।
প্রজন্মনিজ২৪/আব্দুল কাইয়ুম
পঞ্চগড়ে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপন'২৪
ছয় দিনের সরকারি সফরে আজ বুধবার থাইল্যান্ড গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষা হবে পাঁচ ঘণ্টা
বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিসকা’র অনুমতি দেয়নি ঢাবি প্রশাসন
আদালত অবমাননা : বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীর বিষয়ে আদেশ পেছাল
ফরিদপুরে দুই শ্রমিক হত্যার ঘটনায় বিএনপির তদন্ত কমিটি
রুমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৭ কেএনএফ সদস্য কারাগারে
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সরকারের লক্ষ্য: অর্থ প্রতিমন্ত্রী