স্বাস্থ্য সংবাদ

মা ও শিশুর পাশে থাকবে বিএমএস

প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০৭:০৬:০৫

মা ও শিশুর পাশে থাকবে বিএমএস

 বিশেষ প্রতিনিধি: মা ও শিশুমৃত্যুহার কমাতে এদেশের প্রতিটি মা ও শিশুর পাশে থাকবেন একজন মিডওয়াইফ।  আমাদের মিডওয়াইফরা একজন মাকে ডেলিভারির আগে থেকে পর্যবেক্ষণে রাখেন এবং প্রতিনিয়ত রিপোর্ট করে থাকেন। সেই রিপোর্টই প্রমাণ করে মায়ের নরমাল ডেলিভারি হবে না অপারেশন করতে হবে।

বাংলাদেশ মিডওয়াইফারি সোসাইটি (বিএমএস) আজ ২২ ডিসেম্বর শনিবার রাজাধানীর বিজয়নগরের হোটেল৭১ এ মিডওয়াইফদের অংশগ্রহণে দিনব্যাপী এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন, বিশিষ্ট লেখক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাকিলা মতিন মৃদুলা। সারাদেশ থেকে ৩৬ জন মিডওয়াইফ এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বিএমএস-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হালিমা আক্তার, সেক্রেটারি জেসমিন আক্তার ও কোষাধ্যক্ষ রেহেনা খানম। অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনা করেন প্রজেক্ট ম্যানেজার শারমিন জয়া এবং ফাইন্যান্স কো-অডিনেটর এরশাদুল হক। সভাপতিত্ব করেন বিএমএস-এর সভাপতি মমতাজ বেগম।

এ বিষয়ে প্রজেক্ট ম্যানেজার শারমিন শবনম জয়া সাংবাদিকদের বলেন, একজন মায়ের নরমাল ডেলিভারি করাতে কখন কখন ১৮ ঘন্টা সময় লাগে। আবার কখনও কম সময় লাগে। অসচেতনতার কারণে রোগীরা এতো দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে চান না। তবে সময় কম বা বেশি লাগার বিষয়টা মায়ের শারীরিক অবস্থানসহ আরো বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে।

শারমিন আরও বলেন, আমাদের মিডওয়াইফরা একজন মাকে ডেলিভারির আগে থেকে পর্যবেক্ষণে রাখেন এবং প্রতিনিয়ত রিপোর্ট করে থাকেন। এ সেবা প্রতিটি মায়ের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে মাতৃমৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে আসবে।  এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে প্রায় এক হাজার ২০০ জন নিবন্ধিত মিডওয়াইফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতে কাজ করছেন। এরা তিন বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। কর্মরত এসব মিডওয়াইফরা সফলতার সাথে মা ও শিশু স্বাস্থ্যের পরিচর্যা করে থাকেন। সেই সাথে মায়ের নরমাল ডেলিভারি করানোর মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান প্রতিরোধ করেন।

বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী একজন মা ও শিশু, গর্ভধারণের পর থেকে শুরু করে সন্তান প্রসব পরবর্তী ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত একজন মিডওয়াইফের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে থেকে মিডওয়াইফারি সেবা গ্রহণ করে থাকেন।বাংলাদেশে মা ও শিশুস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিটি মায়ের পাশে থাকবেন একজন মিডওয়াইফ। বাংলাদেশ মিডওয়াইফেরি সার্ভিসকে শক্তিশালী এবং মিডওয়াইফদেরকে সমাজে গ্রহণযোগ্য করে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ মিডওয়াইফারি সোসাইটি (বিএমএস) তার কর্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

উল্লেখ্য যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফ পেশাটি শত বছর পুরোনো হলেও বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে প্রথমবারের মতো মিডওয়াইফারি পেশাটি ২০১০ সালে স্বীকৃতি ও পরিচিতি লাভ করে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএমএস মিডওয়াইফদের প্রফেশনাল এসোসিয়েশন হিসেবে ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

  বংলাদেশে বর্তমানে ৫৪টি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে সরকারি ৩৮টি এবং বেসরকারি ১৬টি। এ সব প্রতিষ্ঠানে তিন বছর মেয়াদি মিডওয়াইফারি ডিপ্লোমা করার সুযোগ রয়েছে। বছরের প্রথম ভাগে নির্ধারিত সময়ে এইচএসসি পরীক্ষোত্তীর্ণ ছাত্রীরা এ ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তির আবেদন করতে পারেন। তিন বছরের এ ডিপ্লোমা প্রোগ্রামের মাধ্যমে দক্ষ প্রশিক্ষক দ্বারা মিডওয়াইফারি ছাত্রীদের মা ও শিশুস্বাস্থ্য, যৌন প্রজনন, জন্মনিয়ন্ত্রণ, নরমাল ডেলিভারি, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা, এ্যাডভোকেসি ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে পাঠ্যবইসহ ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসে দক্ষ করে তোলা হয়।

ইউএনএফপিএ এর অর্থায়নে- বিএমএস-আরসিএম (রয়েল কলেজ অব মিডওয়াইফ) ইউকে এর যুগ্ম প্রকল্প পরিচালিত হয়।

প্রজন্মনিউজ২৪/সবুজ/আকতার

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ