দূষণের কবলে হারিয়ে যাচ্ছে সিলেটের প্রাণ খ্যাত সুরমা নদী

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০১:১৩:৩৯ || পরিবর্তিত: ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০১:১৩:৩৯

দূষণের কবলে হারিয়ে যাচ্ছে সিলেটের প্রাণ খ্যাত সুরমা নদী দূষণের কবলে হারিয়ে যাচ্ছে সিলেটের প্রাণ খ্যাত সুরমা নদী

সাকিল আহমেদঃ  ময়লা-আবর্জনা ও কলকারখানার বর্জ্য পড়ে এখন আবর্জনাবাহী এক দূষিত নদী সুরমা।এক সময়ের সেই স্বচ্ছ জলও এখন আর নেই হারিয়ে যাচ্ছে নাবত্যাও।দেখে মনে হতে পারে একটি নর্দমা।যাবতীয় আবর্জনা ফেলার ভাগাড়।সিলেট নগরীর বুক চিরে বয়ে চলা সুরমা নদী আবর্জনার দূষণে পড়ে এখন প্রায় মৃতপ্রায়।

নগরীর ছড়া ও নালার পানির শেষ গন্তব্য সুরমা নদী।সচেতনার অভাবে নগরীর দূষিত পানি যাচ্ছে নদীতে।এছাড়া  ময়লা-আবর্জনা  ,কলকারখানার দূষিত পানি সরাসরি নদীতে ফেলায় দূষনে ধূসর সুরমা নদী। প্রতি শুস্ক মৌসুমে সুরমা নাব্যতা হারিয়ে প্রায় মরা খালে পরিনত হয়।হেঁটেই পার হওয়া যায় নদী।দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় নদীর বুকে পলি জমেছে।সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় চর।তার সাথে ময়লা আবর্জনা তো আছেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে,কুশিঘাট,কদমতলী ঘাট,মাছিমপুর, কালিঘাট,চাদঁনীঘাট,কাজিরবাজার,টেকনিক্যাল রোড ঘাট,ক্কীন ব্রিজ এলাকায় নদীতীরে স্থানীয় লোকজন নিয়মিত হোটেল-রেস্তোরাঁর পচাঁ-উচ্ছিষ্ট খাবারসহ নানা রকমের বর্জ্য ফেলছে।তীরে ফেলার কারনে এসব বর্জ্য গড়িয়ে পানিতে পড়ে।কয়েকবছর ধরে প্রকাশ্যে এসব বর্জ্য পানিতে ফেললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দূষণ রোধে কোন ব্যবস্হা গ্রহন করে নি।

ক্কীন ব্রীজ এলাকার ডানে ও বায়ে অন্তত আধা কিলমিটার করে প্রায় এক কিলোমিটার স্থানে  দূষণের ত্রীবতা সবচেয়ে বেশি।যতদূর চোখ যায়,দেখা যায় পরিত্যাক্ত প্লাস্টিকের বোতল আর ময়লা আবর্জনা পানিতে ভাসছে। কালীঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,পেঁয়াজ রসুনের ময়লা আবর্জনা ভেসে যাচ্ছে নদীতে।কালীঘাটের প্রায় সব আবর্জনা সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে।

নগরীর মাছিমপুর এলকায় গিয়ে দেখা যায়,গৃহস্থলির ময়লা ফেলা হচ্ছে নদীতে আর পাশেই দলবেঁধে গোসল করছে এলাকার লোকজন। নগরীর কাজিরবাজার মাছের আড়ৎ এ গিয়ে দেখা যায়,ককশিট ও মাছের খাচাঁ ও বাজারের সব ময়লা আবর্জনা সরাসরি ফেলা হচ্ছে নদীতে।তাছাড়া কাজিরবাজারের মাছের আড়তে শৌচাগারের লাইন নদীর সঙ্ঘে সরাসরি লিংক করা।

সুরমা নদীর নাব্যতা বাড়াতে “সুরমা রিভার রেস্টুরেশন প্রজেক্ট” নামে একটি প্রকল্প যা গতবছরের ৬ জুন সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দিয়েছে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড।৫৩৭ কোটি টাকার এই প্রকল্প অনুমোদিত হলে সুরমা নদীর ১৬০ কিলোমিটার ড্রেজিং করা হবে।অবশ্য এ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্ঘে কথাবার্তা হলেও সমঝোতা হয়নি এখনো।

পরিবেশকর্মী জাহিদ সরওয়ার বলেন,বড় কষ্ট হয় নদীর দিকে তাকালে।নদীর তীরের বাতাশে যেন বিষাক্ত গন্ধ অনুভূত হয়।মনে ভয় নদী বাচাঁনোর জন্য কি কেউ নেই।আগে যে নদী দিয়ে বড় বড় জাহাজচলাচল করতো,এখন সে নদীর বিভিন্ন স্থানে জেগেছে চর।দূষণের কারনে পানির রঙ কালছে হয়ে গেছে।এখন নদীতে সরাসরি ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা।আর এসব কারনে দিন দিন নদীকে মেরে ফেলা হচ্ছে।ভবিষ্যতে কাদঁতে হবে এই  নদীর জন্য।

জাহিদের মতো আরো অনেক পরিবেশকর্মীর প্রশ্ন,এক সময়ের প্রমত্তা সুরমা নদী কালের বিবর্তনে এবং আমাদের অসচেতনতা জন্য হারিয়ে যাচ্ছে দেখার কি কেউ নেই?সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টির দিকে একটু নজর দেন তাহলে আমরা ফিরে ফেতে পারি আমাদের সেই সুরমা নদীকে।

প্রজন্মনিউজ২৪/নিরব

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ