দাপুটে জয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১০:৪২:০১

দাপুটে জয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ২০০ ওয়ানডে খেলার অনন্য মাইলফলক ছোঁয়ার উপলক্ষটা দারুণ পারফরম্যান্সেই রাঙালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।বাংলাদেশ ক্রিকেটের মাশরাফি মুর্তজা এক অনণ্য অনুপ্রেরণার নাম। এমন একটি গৌরব প্রথম তারই প্রাপ্য ছিল।

ম্যাচসেরা হয়ে দেশের মাটিতে নিজের সম্ভাব্য শেষের শুরুটাও স্মরণীয় করে রাখলেন মাশরাফি। টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করার পর রঙিন পোশাকে বাংলাদেশের শুরুটা হলো আরও রঙিন।

রোববার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পাঁচ উইকেটের দাপুটে জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। নয় উইকেটে ১৯৫ রানে উইন্ডিজকে বেঁধে ফেলে কাজটা সহজ করে দিয়েছিলেন মাশরাফি ও মোস্তাফিজুর রহমান। দুর্দান্ত বোলিংয়ে দুই পেসারই নিয়েছেন সমান তিনটি করে উইকেট। এরপর মুশফিকুর রহিমের হার না-মানা ফিফটিতে ৮৯ বল বাকি থাকতেই পাঁচ উইকেটে অনায়াস জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে এটি বাংলাদেশের দশম জয়। আগামীকাল একই ভেন্যুতে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে।

মাঝারি লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতে তিন বল আগে-পরে তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের আউট খানিকটা ধাক্কা হয়ে এসেছিল বাংলাদেশের ইনিংসে। সেই ধাক্কা স্বাগতিকরা সামলে ওঠে লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের চওড়া ব্যাটে। ইনজুরি থেকে সেরে উঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা তামিম ইকবাল শুরুটা করেছিলেন ভালো। কিন্তু ২৪ বলে ১২ রান করে স্পিনার বিশুর বলে পয়েন্টে চেজকে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তামিম। পরের ওভারে তাকে অনুসরণ করেন ইমরুল (৪)। আগের বলে থমাসকে চার মারা ইমরুল পরাস্ত হন গতিতে। বোল্ড হয়ে ফেরেন এই ওয়ানডাউন ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশ তখন ২/৪২।

এরপর লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম স্বাগতিকদের নিয়ে যান ৮৯ রান পর্যন্ত। ৫৭ বলে ৪১ রান করে নিজের উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসেন লিটন। চতুর্থ উইকেটে মুশফিক ও সাকিব আল হাসানের ৫৭ রানের জুটিতে ম্যাচের ফল নিয়ে সব সংশয় মুছে যায়। সাকিব ২৬ বলে ৩০ ও সৌম্য সরকার ১৩ বলে ১৯ রান করে সাজঘরের পথ ধরলেও মুশফিক ছিলেন অবিচল। ক্যারিয়ারের ৩১তম ওয়ানডে ফিফটি তুলে নেয়ার পর মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে দলকে জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে দেন মুশফিক। ৭০ বলে পাঁচ চারে তিনি অপরাজিত থাকেন ৫৫ রানে। মাহমুদউল্লাহ করেন ২১ বলে অপরাজিত ১৪।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২০০-র মধ্যে বেঁধে রাখার কৃতিত্ব দুই পেসার মাশরাফি মুর্তজা ও মোস্তাফিজুর রহমানের। নিজের ২০০তম ওডিআইতে দুরন্ত বোলিংয়ে তিন উইকেট নিয়ে মাশরাফি দেখিয়ে দেন, তিনি এখনও অনন্য। তার বোলিং ফিগার- ১০-০-৩০-৩। তিন উইকেট নেন মাশরাফির অনুজ মোস্তাফিজও।

তবে রান দেন একটু বেশি। ১০ ওভারে ৩৫। অষ্টম ওভারে প্রথম উইকেট হারানো ক্যারিবীয়রা পূর্ণ শক্তির দল নামিয়েও রঙিন পোশাকের ক্রিকেটের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি। ৫৯ বলে ৪৩ রান করা ওপেনার শাই হোপ দলের টপ স্কোরার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রান আসে কিমো পলের ব্যাট থেকে। ওপেনার কিয়েরান পাওয়েল (১০), ড্যারেন ব্রাভো (১৯), মারলন স্যামুয়েলস (২৫), শিমরন হেটমায়ার (৬) ও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল (১৪) ব্যর্থ। রোস্টন চেজ করেন ৩২ রান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের একমাত্র বলার মতো পার্টনারশিপ সপ্তম উইকেটে পল ও চেজের ৫১ রান। বাংলাদেশের কর্তৃত্বের শুরু অষ্টম ওভারে, যখন সাকিবের বল কিয়েরন পাওয়েল তুলে দেন আকাশে। পয়েন্টে ক্যাচ নেন রুবেল। দু’বছর পর ওডিআইতে ফেরা ব্রাভো একবার ‘জীবন’ পেয়েও রক্ষা করতে পারেননি নিজেকে। পরের ওভারে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে তাকে ফেরান তামিম। বোলার ছিলেন মাশরাফি। মেহেদী হাসান মিরাজ এ নিয়ে পঞ্চমবার সাজঘরে ফেরত পাঠান হেটমায়ারকে। ছয় রানে রুবেলের বদান্যতায় রক্ষা পাওয়া রভম্যান মাশরাফির তৃতীয় শিকারে পরিণত হন।

প্রজন্মনিউজ২৪/নিরব

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ