দন্ড স্থগিত হলে নির্বাচন করতে পারবে

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর, ২০১৮ ০২:৫৫:১১

দন্ড স্থগিত হলে নির্বাচন করতে পারবে

হাইকোটের্র পযের্বক্ষণে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির দন্ড আপিল বিভাগে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি না হওয়া পযর্ন্ত তার সাজা বা দন্ড চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে না। তবে আপিল চলাকালে তার সাজা বা দন্ড স্থগিত হলে তিনি নিবার্চনের জন্য অযোগ্য হবেন না।

বিচারিক আদালতের দেয়া সাজা কিংবা দন্ড হাইকোটের্ স্থগিত হলে দন্ডিত ব্যক্তি নিবার্চনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলে পযের্বক্ষণ দিয়েছেন হাইকোটর্। এ আদেশের ফলে, সম্পদের গরমিল তথ্য দুদকে দেয়া সংক্রান্ত মামলায় দন্ড স্থগিত চেয়ে করা আবেদনকারী সাবিরা সুলতানার নিবার্চনে প্রাথীর্ হতে কোনো বাধা নেই।

সে সঙ্গে এ আদেশের ফলে, এখন থেকে হাইকোটের্ কারো দন্ড স্থগিত করার পর প্রাথীর্র নিবার্চন করতে আর কোনো বাধা নেই। ঝিকরগাছা উপজেলার চেয়ারম্যান সাবিরা সুলতানার সাজা ও দন্ড স্থগিত করে বৃহস্পতিবার হাইকোটের্র বিচারপতি মোহাম্মদ রইচ উদ্দিনের একক বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে সাবিরা সুলতানার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম।

এ সময় দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এবিএম বায়েজিদ। পরে আমিনুল ইসলাম জানান, সাবিরা সুলতানার দন্ড স্থগিত চেয়ে আবেদন জানালে আপিল বিভাগ তা নিষ্পত্তি করতে হাইকোটের্র একক বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। শুনানি নিয়ে আদালত আদেশ দেন। আদেশে ফৌজদারি কাযির্বধির ৪২৬ (১) ধারা এবং সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুসারে সাবিরা সুলতানার সাজা ও দন্ড স্থগিত করেন।

এখন জাতীয় সংসদ নিবার্চনে অংশ নিতে তার আর কোনো বাধা থাকলো না। আদালত পযের্বক্ষণ দিয়ে বলেছেন, কোনো ব্যক্তির দন্ড আপিল বিভাগে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি না হওয়া পযর্ন্ত তার সাজা বা দন্ড চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে না। তবে আপিল চলাকালে তার সাজা বা দন্ড স্থগিত হলে তিনি নিবার্চনের জন্য অযোগ্য হবেন না।

বিচারিক আদালতে দন্ডিত ব্যক্তির সাজা কিংবা দন্ড স্থগিত করার ক্ষমতা হাইকোটর্ বিভাগের রয়েছে বলেও পযের্বক্ষণে বলা হয়। এই আদেশের পর থেকে যারা নিবার্চনে অংশ নিতে চান তারা হাইকোটের্ সাজা বা দন্ড স্থগিত চেয়ে আবেদন করে নিবার্চনে অংশ নিতে পারবেন বলে জানান অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম।

তবে এর আগে গত ২৮ নভেম্বর বিচারিক আদালতে কোনো ব্যক্তি ২ বছরের অধিক সাজাপ্রাপ্ত হলে তিনি নিবার্চনে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন না বলে হাইকোটের্র আদেশ বহাল রাখেন সুপ্রিম কোটের্র আপিল বিভাগ। এর ফলে বিচারিক আদালতের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোটের্ দন্ড স্থগিত করা হলে কিংবা আপিল চলাকালে কোনো ব্যক্তি নিবার্চনে অংশ নিতে পারবেন না।

তবে সুপ্রিম কোটের্র আপিল বিভাগে দÐ স্থগিত কিংবা বাতিল হলে ওই ব্যক্তির নিবার্চনে অংশ নিতে কোন বাধা থাকবে না। এর ফলে হাইকোটের্র দুইটি পৃথক বেঞ্চ সাজা বা দন্ড স্থগিত নিয়ে পৃথক পযের্বক্ষণ দেয়ায় নিবার্চন কমিশন কোন আদেশ অনুসরণ করবে সে বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম বলেন, যাদের ক্ষেত্রে আদালত ইতোমধ্যে দন্ড স্থগিত করেনি তারা নিবার্চনে অংশ নিতে পারবেন না।

তবে এই আদেশের পর যারা এই আদেশের আলোকে হাইকোটের্ দন্ড স্থগিত চেয়ে আবেদন করবেন তারা নিবার্চনে অংশ নিতে পারবেন। এর আগে মিথ্যা তথ্য ও জ্ঞাত আয়-বহিভূর্ত অবৈধভাবে সম্পদ অজের্নর অভিযোগে দুনীির্ত দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা সুলতানাকে গত ১২ জুলাই ঢাকার বিশেষ আদালতের বিচারক শহিদুল ইসলাম দুনীির্ত দমন আইন ২০০৪ সালের ২৬ (২) ধারায় তিন বছর ও ২৭ (১) ধারায় তিন বছর কারাদন্ডদেশ দেন।

একই সঙ্গে দুটি ধারায় পঁাচ হাজার টাকা অথদন্ড ও অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদদন্ডর আদেশ দেন আদালত। পাশাপাশি পৃথক দুই ধারায় তাকে দেয়া ৩ বছরের সাজা একসঙ্গে চলবে বলেও আদেশ দেন আদালত। রায়ে সাবিরা সুলতানার ১ কোটি ৭৮ হাজার ১৩৫ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করারও আদেশ দেয়া হয়।

এরপর গত ১৭ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ-৭ এর বিচারক মো. শহিদুল ইসলামের আদালতে আত্মসমপর্ণ করে আপিলের শতের্ জামিনের আবেদন করেন তিনি। আদালত শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরপর এ মামলায় তিনি গত ৬ আগস্ট তিনি হাইকোটর্ থেকে জামিন নেন। পরে আসন্ন জাতীয় নিবার্চনে অংশ নিতে সাবিরা সুলতানা তার সাজা ও দন্ড স্থগিত চেয়ে আবেদন জানালে তার শুনানি গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেন হাইকোটের্র একটি বেঞ্চ। এরপর নিয়ম অনুসারে মামলাটি শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি মামলাটি বিচারপতি মোহাম্মদ রইচ উদ্দিনের একক হাইকোটর্ বেঞ্চ পাঠিয়ে দেন।

যার ধারাবাহিকতায় এ মামলার শুনানি নিয়ে (তিনি) সাবিরা সুলতানার সাজা ও দন্ড স্থগিত করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে সাজা বা দন্ড স্থগিত করলে বিচারিক আদালতে দন্ডিত ব্যক্তি নিবার্চনে অংশ নিতে পারবেন বলে পযের্বক্ষণ দেন হাইকোটর্। প্রসঙ্গত, মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের ২৪ মে সাবিরা সুলতানা তার ৫৫ লাখ ৭৮ হাজার ১৩৫ টাকা সম্পদের হিসাব জমা দেন দুদকে।

পরবতীর্ সময়ে দুককের অনুসন্ধানে দেখা যায় ৪৫ লাখ টাকার সম্পদের বিষয়ে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য দেওয়াসহ ১ কোটি ৭৮ হাজার ১৩৫ টাকার সম্পত্তি অসাধু উপায়ে অজর্ন করেছেন সাবিরা সুলতানা। যা তার বৈধ আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূণর্।

ওই ঘটনায় গত ২০১০ সালের ২০ জুলাই সৈয়দ আহমেদ (দুদকের সহকারী পরিচালক) বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর ওই বছর ২৫ জুলাই ৯ জনকে সাক্ষী করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০১১ সালের ৯ নভেম্বর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

প্রজন্মনিউজ২৪/জামান

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ