ঢাবির  বন্ধ দুয়ার খুললেন হৃদয়

প্রকাশিত: ০৯ নভেম্বর, ২০১৮ ১২:০৩:৫১

ঢাবির  বন্ধ দুয়ার খুললেন হৃদয়

এতদিন শুধু বাক, শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্যই সংরক্ষিত ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রতিবন্ধী কোটা। বহু বছর ধরে চলে আসা এ রীতি থেকে সরে এসেছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।

এখন থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধীরাও প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত এ প্রতিষ্ঠানের গর্বিত শিক্ষার্থী হওয়ার সুযোগ পাবেন। আর ঐতিহাসিক এ ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে নেত্রকোণার হৃদয়ের নাম। মায়ের কোলে চড়েই প্রথম শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে ঢাবিতে পা রেখেছেন তিনি।

চলতি বছর ঢাবিতে ভর্তি হতে মায়ের কোলে চড়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন হৃদয় সরকার। প্রতিবন্ধী কোটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রতিবন্ধীদের জন্য এ কোটা সংরক্ষিত থাকলেও এখন থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা এই সুবিধা পাবেন।

গতকাল উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে ডিনস কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের অধীনে ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ২ হাজার ৩৭৮টি আসনের বিপরীতে হৃদয়ের মেধাক্রম ছিল ৩ হাজার ৭৪০তম। তিনি মেধায় সুযোগ না পেলেও কোটায় সুযোগ পাবেন বলে সে সময় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল।

তবে ভর্তির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অফিসে এসে হতাশ হন হৃদয়। শুধু ‘বাক, শ্রবণ ও দৃষ্টি’ প্রতিবন্ধীদের কোটায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকায় তিনি এর কোনোটির মধ্যে পড়ছিলেন না।চলচ্ছক্তিহীন হৃদয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পাওয়া নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার প্রেক্ষিতেই ডিনস কমিটির সভায় শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে হৃদয়কে ভর্তির সুযোগ দেয়া হয় বলে মাকসুদ কামাল জানান।

তিনি বলেন, ‘হৃদয়কে ভর্তি করানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আগে তো বাক, শ্রবণ আর দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ভর্তি করানো হত। কিন্তু এখন থেকে এর সঙ্গে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের বিষয়টিও যোগ করা হয়েছে৷

কেউ যদি মেধাতালিকায় থাকে এবং কোটায় ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা থাকে তাহলে তারা ভর্তির সুযোগ পাবে। আগামীবার থেকে এটা কার্যকর করা হবে।’ঢাবির সিদ্ধান্তে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হৃদয় তার মা সীমা সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ জানান।

অজানা রোগে জন্ম থেকেই চলচ্ছক্তিহীন হৃদয় স্কুল থেকে কলেজ, তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা- সবখানেই মায়ের কোলে চড়েই গেছেন। আর তার এই যুদ্ধে সব সময় শক্তি যুগিয়েছেন মা সীমা সরকার।

সমীরণ সরকার ও সীমা সরকারের দুই সন্তানের মধ্যে বড় হৃদয় নেত্রকোণার আবু আব্বাস ডিগ্রি কলেজ থেকে জিপিএ ৪ দশমিক ৫০ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক ও নেত্রকোণা জেলা স্কুল থেকে জিপিএ ৪ দশমিক ০৬ পেয়ে মাধ্যমিক পাস করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র মায়ের কোলে হৃদয়ের ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করার অল্প সময়ের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। আর হৃদয় জয় করে নেন অসংখ্য মানুষের হৃদয়।সে সময় হৃদয় বলেন, ‘আমার এই ফলাফলের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান আমার মায়ের। সেই ছোট থেকেই তিনি আমাকে কোলে করে স্কুল-কলেজে নিয়ে যান’।

বলেন, ‘তিনি আমাকে কোনো দিন হুইল চেয়ার ব্যবহার করতে দেননি। তিনি বলেন, যতদিন তিনি বেঁচে আছেন, যতদিন সামর্থ্যে কুলায়, তিনি আমাকে কোলে করেই নিয়ে যাবেন।’

প্রজন্মনিউজ২৪/জামান

 

 

এ সম্পর্কিত খবর

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাঁচবে হাজারও কোটি টাকার সম্পদ

সরদার পাড়া দারুল কোরআন মডেল মাদ্রাসার পরিক্ষার ফল প্রকাশ

চলতি বছর পবিত্র হজ্জ পালনের অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব

ইসরায়েল থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের দাবিতে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চুয়েট, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ

বশেমুরবিপ্রবিতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে কৃষকের জনজীবন

ডাকঘরে পোস্ট মাস্টারের আইসক্রিম ডিলারের ব্যবসা

নেতানিয়াহুর পদত্যাগ চান ন্যান্সি পেলোসি

আবারও ‘হিট অ্যালার্ট’ এর মেয়াদ বাড়ালো আবহাওয়া অধিদফতর

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ