৮ নভেম্বর তফসিল, ২০ অথবা ২৩ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ

প্রকাশিত: ০৫ নভেম্বর, ২০১৮ ০৩:৫১:৪০

৮ নভেম্বর তফসিল, ২০ অথবা ২৩ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ

আগামী ৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই দিন বিকালের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে তফসিল ঘোষণা করবেন। ইসির প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০ অথবা ২৩ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ করা হতে পারে। তবে ২৩ ডিসেম্বরকেই ভোটের তারিখ রাখার পক্ষে কমিশন।

গতকাল রবিবার কমিশন সভা শেষে সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদত হোসেন চৌধুরী বলেন, আগামী ৮ নভেম্বর আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে এই তফসিল ঘোষণা করবেন। ঘোষণা অপরাহ্নে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তার আগে তফসিল চূড়ান্ত করতে সিইসি কক্ষে জরুরি ভিত্তিতে ৩৯তম কমিশন সভা ডাকা হয়।

তবে ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তফসিল ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ হলেও গতকালের বৈঠকে মনোনয়নপত্র দাখিল ও ভোট গ্রহণের তারিখসহ বিস্তারিত সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়নি। ৮ নভেম্বর সকাল ১০টায় সংক্ষিপ্ত পরিসরে কমিশনের আরেকটি সভায় এ সময়সূচি নির্ধারণ এবং সিইসির ভাষণ রেকর্ডিং সম্পন্ন করা হতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংলাপ শেষ হওয়ার আগে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করার অনুরোধ জানিয়ে ইসিকে চিঠি দিয়েছিল জাতীয়  ঐক্যফ্রন্ট। তাদের এই অনুরোধ ইসি বিবেচনা করেছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, ৪ নভেম্বরই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত ছিল। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ৪ নভেম্বরের পরিবর্তে ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমরা আশা করছি ঐক্যফ্রন্ট ৮ নভেম্বরের আগেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপের সুযোগ পাবে।’

এদিকে তফসিল ঘোষণা ও ভোটগ্রহণের মধ্যে কতদিনের  ব্যবধান থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘একটা স্ট্যান্ডার্ড সময় অনুযায়ী আমরা ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করবো। এটা ৪৫ দিনের কাছাকাছি হতে পারে।’

ইসির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের নির্বাচনগুলোর ভোটগ্রহণ হয় তফসিল ঘোষণার ৪০ থেকে ৪৫ দিনের ব্যবধানে। ২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রথম তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের ৪৫ দিন আগে। ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর ঘোষিত ওই তফসিলে ১৮ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থীরা এ তফসিল অনুসারে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া থেকে বিরত থাকে। এরপর সব রাজনৈতিক দলের সমঝোতার মাধ্যমে ২৩ নভেম্বর পুনঃতফসিল ঘোষণা করে ২৯ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সর্বশেষ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর যে তফসিল ঘোষণা করা হয় তাতে ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন, বাছাই ৫ ও ৬ ডিসেম্বর, প্রত্যাহার ১৩ ডিসেম্বর এবং ভোট গ্রহণের তারিখ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়। এতে তফসিল ঘোষণা থেকে ভোটগ্রহণে সময়ের ব্যবধান ছিল ৪০ দিন। সে সময় নির্বাচনের অংশগ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটগ্রহণের সময় আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল কমিশনের।

অনলাইনে মনোনয়ন দাখিলঃ

সন্ধ্যা সাতটায় ইসির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে শাহাদাত হোসেন বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র গ্রহণের যে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া তার সাথে অনলাইনে মনোনয়নপত্র গ্রহণের জন্য আমরা বিধি প্রণয়ন করেছি। সেটা আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে। ইভিএম ব্যবহারের বিধিমালাও একইভাবে আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী জানান। বিএনপির গঠনতন্ত্র নিয়ে আদালতের নির্দেশনা প্রতিপালনের কথা জানান তিনি। তবে ক’দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করা হবে নিশ্চিত জানাননি এ নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, যেহেতু আদালতের নির্দেশনা প্রতিপালনের বিষয় রয়েছে; বাধ্যবাধকতা রয়েছে। খুব শিগগির আমরা তা করবো।

ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ও জনসংযোগ পরিচালক যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত কমিশনের ৩৮ তম সভা চলে। সন্ধ্যা ছয়টার পর বসে ৩৯ তম কমিশন সভা। এ সভায় তফসিল কবে হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

কমিশন সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো:রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, সংবিধান অনুযায়ী ৩১ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন করতে হবে।

প্রজন্মনিউজ২৪/এম বিল্লাহ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ