একনেকে রেকর্ড ২৪ প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর, ২০১৮ ০২:২৪:১৫

একনেকে রেকর্ড ২৪ প্রকল্প অনুমোদন

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা ।নির্বাচনী তাড়া হুড়োয় একদিনে রেকর্ড ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি(একনেক।এর মধ্যে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় মাল্টি সেক্টর প্রকল্পও রয়েছে।

প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২৪ হাজার ৭৪০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১৯ হাজার ৩৬১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩০৬ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৫ হাজার ৭২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। একনেক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব)ড.শামসুল আলম এবং শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস সহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।মন্ত্রী জানান, গত ৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মোট ১৪৮টি একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এসব একনেকে ১ হাজার ২৯৭টি প্রকল্প অনুমোদন পায়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ১৪ লাখ ৮৬ হাজার ১২৭ কোটি টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা যতদিন কক্সবাজারে থাকবেন ততদিন তাদের ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব আমাদের। আমরা তাদের ভালো থাকার ব্যবস্থা করছি।

যখন তারা মিয়ানমারে ফেরত যাবেন তখন সেখানকার স্থানীয় বাংলাদেশিরা এসব অবকাঠামোর সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। কেননা রোহিঙ্গাদের কারণে তারা অনেক কষ্ট ভোগ করছেন।জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় মাল্টি সেক্টর প্রকল্পটি ১ হাজার ৫৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে।

এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা এবং বিশ্বব্যাংকের অনুদান থেকে ১ হাজার ৪৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। চলতি বছর থেকে ২০২১ সালে বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্প এলাকা হচ্ছে, কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলা।

প্রকল্পের আওতায় রোহিঙ্গাদের জন্য সুপেয় পানি, স্বাস্থ্য ও পয়ঃনিষ্কাশন, আশ্রয় শিবিরের অভ্যন্তরে সড়ক, ফুটপাত, বাতি, হাটবাজার উন্নয়ন, যোগাযোগকারী সড়ক, সেতু, সাইক্লোন শেল্টার, মাল্টিপারপাস কমিউনিটি কেন্দ্র, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ইত্যাদি কাজ অতি জরুরি ভিত্তিতে নির্মাণ করা হবে।

অন্য একটি প্রকল্পের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ডিজিএফআই চলছে এনালগ পদ্ধতিতে। তাদের ডিজিটাল করতেই ডিজিএফআই শক্তিশালীকরণ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ফেসবুকে অনেক খারাপ অ্যাপসও আছে।কিভাবে আগামী প্রজন্ম এসব হজম করবে জানি না। ফেসবুকে অনেক গুজব ছড়ানো হয়।এজন্য আইন করা হয়েছে।

সেই আইন বাস্তবায়নে ডিজিএফআইকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। সাইবার অপরাধ ও জঙ্গিবাদসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম কমে আসবে বলে আশা করছি।তিনি জানান, একনেকে ডাকঘরগুলোতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ই-কর্মাসসহ বিভিন্ন নতুন কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সব পুলিশের জন্য পর্যায়ক্রমে আবাসন ব্যবস্থা করতে হবে। প্রত্যেক জেলায় একটি করে ১০ তলা ভবন তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলো হচ্ছে- বগুড়া থেকে শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন-সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত নতুন ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ,ব্যয় হবে ৫ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা ।এছাড়া ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ(দ্বিতীয় সংশোধিত),ব্যয় ১ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ১ থেকে ৫নং জোনের অভ্যন্তরীণ রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ, ব্যয় ১ হাজার ৫১০ কোটি টাকা, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ ও উন্নয়নসহ সড়কের নিরাপত্তা উন্নয়ন, ব্যয় ৬৯৪ কোটি টাকা।

ডিজিএফআইর টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি অবকাঠামো, মানবসম্পদ এবং কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়ন, ব্যয় ১ হাজার ২৭২ কোটি টাকা।মাদানী এভিনিউ থেকে বালু নদী পর্যন্ত মেজর রোড প্রশস্তকরণ এবং বালু নদী থেকে শীতলক্ষ্যা নদী পযন্ত সড়ক নির্মাণ(প্রথম পর্ব),ব্যয় ১ হাজার ২৫৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, বাংলাদেশ সচিবালয়ে ২০ তলাবিশিষ্ট নতুন অফিস ভবন নির্মাণ, ব্যয় ৪২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা,কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত),ব্যয় ৭৯৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।

রাজউক পূর্বাচল ৩০০ ফুট মহাসড়ক থেকে মাদানী এভিনিউ-সিলেট মহাসড়ক পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ, ব্যয় ৪৫৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা। ডাক অধিদফতরের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ, ব্যয় ৪৭৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্য বীর যোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, ব্যয় ৪৬০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ পুলিশের জন্য ৯টি আবাসিক টাওয়ার নির্মাণ, ব্যয় ৯২৭ কোটি টাকা। ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅ্যাবিলিটিজ (দ্বিতীয় সংশোধিত), ৪২২ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা, ব্যয় ১ হাজার ১৮৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।

প্রজন্মনিউজ২৪/ওসমান

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ