শহর থেকে গ্রামে ভ্রমণ

প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর, ২০১৮ ০১:০৪:৪৯

শহর থেকে গ্রামে ভ্রমণ

(প্রথম র্পব)

ইমতিয়াজ শেখ পেশায় একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে। বালক বয়সেই মামার সাথে তিনি গ্রাম থেকে ঢাকা শহরে পাড়ি জমান। এবং সেখানেই পড়ালেখা শেষে ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন্।

ব্যবসার কাজে ভীষণ ব্যস্ত থাকায় গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয় না বললেই চলে। যদিও গ্রামে মা-বাবা,ভাই-বোনসহ তার অনেক আত্নীয় পরিজন রয়েছেন। ইমতিয়াজ সাহেবের দুই ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে অসীম দশম শ্রেণীতে পড়ে, ছোট ছেলে নিশাম পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে এবং তার একমাত্র মেয়ে আনিশা পড়ে চর্তুথ শ্রেণীতে।

ইমতিয়িাজ সাহেবের ছেলেমেয়েরা কখনো গ্রামে বেড়াতে যায় নি। তাই গ্রামে বেড়াতে যাওয়ার জন্য তাদের আবদারের শেষ নেই। আজ তাদের স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি হবে। আর তাই বেশ কিছুদিন ধরেই তাদের বায়না গ্রামে বেড়াতে যাবে।

ইমতিয়াজ সাহেবের স্ত্রী সেলিনা বেগম তো কোন মতেই গ্রামে যেতে রাজি নন। গ্রামে সব অশিক্ষিত লোকের বাস সেখানে গেলে তাদের ছেলে মেয়েগুলোর মাথা আজেবাজে কর্মকান্ডে নষ্ট হবে। কিন্তু ছেলেমেয়েদের কঠিন বায়নার কাছে তাদের হার মানতে হয়। এবং তারা গ্রামে যেতে রাজি হয়।রবিবার দিন সকাল বেলা তারা হানিফ কাউন্টার থেকে টিকিট নিয়ে বাস যোগে ঠাঁকুরগার ‍উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।

বাস যখন যমুনা সেতুর ‍উপর দিয়ে অতিক্রম করছিল তখন তারা তিন ভাইবোন অবাক হয়ে নদীর অপরুপ সৌর্ন্দয্যে ‍উপভোগ করছিল। এত সুন্দর এবং এত বড় নদী তারা কখনো দেখেনি । র্দীঘ বারো ঘন্টার র্জানি শেষে অবশেষে তারা ঠাঁকুরগাও শহরে এসে পৌছায় ।অসীমের চাচা সেখানে আগে থেকে অপেক্ষা করছিল তাদেরকে গ্রহণ করার জন্য।এবার তারা একসাথে সিএনজি যোগে গ্রামের পথে রওয়ানা দেন।এবং প্রায় একঘন্টার পরে তারা গ্রামে গিয়ে পৌঁছেন।

অপরদিকে তাদের আগমনের কথা শুনে অসীমের দাদা-দাদী,চাচা-চাচী,চাচাতো ভাই-বোন সহ সকল আত্নীয় স্বজনেরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল তাদের বরন করে নেয়ার জন্য। এবং তারা যখনে এসে পৌছালো তখন তাদের দাদা-দাদী পরম মমতায় তাদের জড়িয়ে ধরল। তারপর তাদের বাড়ির ভিতরে নিয়ে খাবার টেবিলে নিয়ে গেল যেখানে তাদের জন্য আগে থেকে অপেক্ষা করছিল হরেক রকমের সুস্বাদু এবং মিষ্টি সব খাবার

ভোজন পর্ব শেষে  রাত গভীর হওয়ায় তারা ঘুমের দেশে হারিয়ে যায়। পরিদিন খুব ভোরে আবার ঘুম থেকে উঠে পড়ে। অসীমের মা তাদেরকে বাইরে কোথাও যেতে নিষেধ করে কিন্তু কে শোনে কার কথা। চোখের পলকে তারা চাচাতো ভাই-বোনদের সাথে গ্রামের অদূরে বিলের ধারে গিয়ে হাজির হয়। বিলে ফুটে থাকা অসংখ্য শাপলা এবং পদ্ম ফুল দেখে তাদের আনন্দ আর ধরে না। এমন সুন্দর দৃশ্য তারা আগে কখেনো দেখেনি।

অসীম এবং নিশামের খুব ইচ্ছে হয় বিলে নেমে শাপলা এবং পদ্ম ফুল তুলে নিয়ে আসতে কিন্তু তারা তো সাঁতার জানেনা কিভাবে বিলে নামবে। তারা সাতার জানে না একথা জানতে পেরে গ্রামের অন্যান্য ছেলে-মেয়েরা তাদের দেখে হাসা-হাসি করছে। এতে অসীম আর নিশাম ভিষণ লজ্জায় পড়ে যায় ।

গ্রামের ছোট-ছোট, বালক-বালিকারা বিলের পনিতে সাঁতার কেটে মহা আনন্দে ফুল তুলে নিয়ে আসছে। তাদের দুইভাইয়ের খুব ইচ্ছা হয় সাতাঁর  শিখার কিন্তু নীল রঙ্গের পানিতে পাঁ ফেলতেই ভয়ে গা ছম-ছম করে। তাদের আর সাতাঁর শেখা হয় না। অসীমের চাচাতো ভাই মাসুমসহ আরো কয়েকজন বিলের পানিতে সাঁতার কেটে অনেকগুলো ফুল তুলে নিয়ে আসে এবং তাদের তিন ভাই-বোনের হাতে দেয় এতে তারা দারুন খুশি হয়।

এরপর তারা পাশের বোনে জলপাই গাছের নিচে যায় গাছের উপরে পাকা জলপাই দেখে ওদের জিভে জল আসে কিন্তু তারা তো গাছে উঠতে জানে না। এবারো তার চাচাতো ভাই গাছে উঠে জলপাই পেড়ে আনে এবং তারা সকলে মিলে লবণ দিয়ে মজা করে জলপাই খাই।  – (চলবে)

লেখক:-মো:-নুরুজ্জামান

প্রজন্মনিউজ২৪/জামান

  

   

 

 

 

 

      

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ