স্বাধীন মত প্রকাশের ক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি করবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর, ২০১৮ ১১:৪২:৪১

স্বাধীন মত প্রকাশের ক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি করবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

রাকিব মোরতাজা,স্টাফ রিপোর্টার:আইন হল সভ্যতার বাহন। জনকল্যাণকর আইন প্রণয়ন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সাম্প্রতি পাশ হওয়া 'ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সম্পাদক পরিষদ, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, সকল বিরোধীদল ও বুদ্ধিজীবিসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করা হয়েছে।যখন থেকে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তখন থেকেই সম্পাদক পরিষদ, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, সকল বিরোধী দল ও বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আইন পাশ না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে।

কিন্তু সরকার সকলের মতামত উপেক্ষা করে গতকাল ১৯ সেপ্টেম্বর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি পাশ করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বহু সমালোচিত ও বিতর্কিত ৩২ ধারা বহাল রাখা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে ‘যদি কোন ব্যক্তি অফিসিয়াল সিক্রেসি এ্যাক্ট-এর আওতাভূক্ত অপরাধ কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোন ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে সংঘটন করেন বা করতে সহায়তা করেন তাহলে তিনি অনধিক ১৪ বছরের কারাদন্ড বা অনধিক ২৫ লাখ টাকা অর্থ বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।

’ ৩২ (২) ধারায় বলা হয়েছে ‘যদি কোন ব্যক্তি উপধারা-১ এ উল্লেখিত অপরাধ দ্বিতীয়বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন তাহলে যাবজ্জীবন বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।’ এ থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, তথাকথিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ টি স্বাধীন মত প্রকাশের ক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি করবে।এই আইন দেশের মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। শুধু তাই নয়, এ আইন দেশের সংবিধানের সাথেও সাংঘর্ষিক।

এই আইন পাশ করার মাধ্যমে সরকার গণমাধ্যম, সংবাদপত্রের এবং মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছে বলে মনে করেন গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টরা। তাই এই আইন বাতিলের দাবিতে সাংবাদিকরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় নানা প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করছে। সম্পাদক পরিষদ সহ গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট কেউই এই আইনকে গ্রহণ করেনি,সবাই আপত্তি জানাচ্ছে। সরকার যদি স্বাধীন গণমাধ্যমে বিশ্বাস করে তবে অনতিবিলম্বে এই আইন বাতিল করবে অথবা মত প্রকাশের স্বাধীনতার সাথে সাংঘর্ষিক এ আইনের ধারাগুলো বাতিল করবে বলে গণমাধ্যম কর্মী ও মানবাধিকার কর্মীরা মনে করেন।

মতামত: মুহাম্মদ আশ্রাফুল আলম ভূঁইয়া,মানবাধিকার কর্মী।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ