প্রকাশিত: ১৯ মে, ২০১৮ ০৪:৫২:৩৪
হিদায়াত মানবজীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুরা ফাতিহায় মানুষকে হিদায়াতের প্রার্থনা শিখিয়েছেন: ‘ইহদিনাছ ছিরাতল মুছতাকিম’ অর্থাৎ আমাদের সঠিক সরল পথ দেখান। (সুরা-১ ফাতিহা, আয়াত: ৪)।এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই ত্রিশ পারা কোরআন নাজিল করা হয়। এই জন্যই সুরা ফাতিহাকে ‘উম্মুল কোরআন’ বা কোরআন বলা হয়। আল্লাহ তাআলা বললেন: ‘হুদাল লিল মুত্তাকিন’ অর্থাৎ এই কোরআন মুত্তাকিদের জন্য হিদায়াত বা সঠিক সরল পথনির্দেশ। (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২)।
এতে প্রতীয়মান হয়, তাকওয়া হলো হিদায়াত পাওয়ার জন্য শর্ত।রমজান মাস তাকওয়া অর্জনের মাস। রমজান মাসের রোজার প্রধান উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জন করা। আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হলো, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্বে যারা ছিল তাদের প্রতিও; যাতে করে তোমরা মুত্তাকি হতে পারো।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৩)।তাকওয়া ইসলামের একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন প্রকৃত মুমিন তাকওয়া দ্বারাই পরিচালিত হন। তাকওয়া মানুষকে পাপ থেকে দূরে রাখে এবং সৎকাজে অনুপ্রাণিত করে। কোরআন করিমে বলা হয়েছে: ‘তোমরা যারা ইমান এনেছ, তারা তাকওয়া অর্জন করো।’ (সুরা-৩৩ আহজাব, আয়াত: ৭০)।
আল্লাহ তাআলা আরও বলেন: ‘যারা ইমান আনল এবং তাকওয়া লাভ করল, তারা আল্লাহর বন্ধু; তাদের কোনো ভয় নেই, দুশ্চিন্তাও নেই।’ (সুরা-১০ ইউনুস, আয়াত: ৬২)। তাকওয়া মুমিনের জীবনে এক অপরিহার্য অংশ, যা মানুষকে আত্মিক উন্নয়নের পথে পরিচালিত করে এবং নৈতিক অধঃপতন থেকে রক্ষা করে।তাকওয়া, তাজকিয়া ও ইহসান ইসলামি শরিয়তের সর্বোচ্চ তিনটি ধাপ। এগুলো শরিয়তের অভ্যন্তরীণ অংশ বা প্রকৃত উদ্দেশ্য।
তাকওয়া অর্থ সাবধান হওয়া, সতর্কতা অবলম্বন করা, ভয় করা, বেছে চলা, পরিহার করা ও দূরে থাকা ইত্যাদি। পরিভাষায় তাকওয়া হলো, আল্লাহ ও রাসুল (সা.) কর্তৃক নিষিদ্ধ বিষয়াবলি থেকে দূর থাকা। তাকওয়ার মূল কথা হলো আল্লাহর প্রেম ও ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয়ে সদা ভীত ও সতর্ক থাকা এবং নবীজি (সা.)-এর সুন্নত পালনের মাধ্যমে আল্লাহর মহব্বত লাভের আশায় সদা সচেষ্ট, উদ্গ্রীব ও উৎকণ্ঠিত থাকা।তাজকিয়া অর্থ সূচিতা, পবিত্রতা, মানোন্নয়ন, শ্রীবৃদ্ধি ইত্যাদি। পরিভাষায় তাজকিয়া হলো আত্মশুদ্ধি, অভ্যন্তরীণ পবিত্রতা, আত্মিক উন্নতি, চারিত্রিক উৎকর্ষ ইত্যাদি।
মূলত তাজকিয়া হলো, ষড়্রিপু তথা-কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্যকে নিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহার করা এবং মানবচরিত্রের নেতিবাচক গুণাবলি যথা-লালসা, অন্যায় বাসনা, পরনিন্দা, মিথ্যা, হিংসা, পরশ্রীকাতরতা, আত্মপ্রচার, আত্ম-অহংকার, কার্পণ্য ইত্যাদি হতে মুক্ত হওয়া।তাজকিয়া মানবজীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একজন মোমিনের প্রকৃত সাফল্য এই তাজকিয়ার ওপরই নির্ভর করে। আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘প্রকৃত তারাই সফল হলো, যারা আত্মশুদ্ধি অর্জন করল।’ (সুরা-৯১ শামছ, আয়াত: ৯)।
তাজকিয়া মুমিন জীবনে লক্ষ্য অর্জনের অনন্য পাথেয়, যা মানুষকে উন্নয়নের চরম শিখরে পৌঁছাতে সাহায্য করে।রমজান হলো তাজকিয়া বা আত্মশুদ্ধির জন্য অনুকূল ও সহায়ক। আর ওহি ও কিতাব নাজিলের উদ্দেশ্যও হলো তাই। হজরত ইব্রাহিম (আ.) দোয়া করেছিলেন এই বলে: ‘হে আমাদের পরওয়ারদেগার! তাদের মধ্যে থেকেই তাদের নিকট একজন পয়গম্বর প্রেরণ করুন, যিনি তাদের কাছে আপনার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবেন, তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেবেন এবং তাদের পবিত্র করবেন। নিশ্চয় আপনিই পরাক্রমশালী হিকমাতওয়ালা।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১২৯)।
মহান প্রভু বলেন: ‘আল্লাহ ইমানদারদের ওপর অনুগ্রহ করেছেন যে তাদের মাঝে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে নবী পাঠিয়েছেন। তিনি তাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন; তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং তাদেরকে কিতাব শিক্ষা দেন।’ (সুরা-৩ আলে ইমরান, আয়াত: ১৬৪)।মহান আল্লাহ তাআলা আরও বলেন: ‘তিনিই উম্মিদের মধ্য থেকে একজন রাসুল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমাত।’ (সুরা-৬২ জুমুআ, আয়াত: ২)।
আল্লাহ তাআলা আরও বলেন: ‘যেমন, আমি পাঠিয়েছি তোমাদেরই মধ্য থেকে তোমাদের জন্য একজন রাসুল, যিনি তোমাদের নিকট আমার বাণীসমূহ পাঠ করবেন এবং তোমাদের পবিত্র করবেন; আর তোমাদের শিক্ষা দেবেন কিতাব এবং শিক্ষা দেবেন এমন বিষয় যা কখনো তোমরা জানতে না।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৫১)।
প্রজন্ম নিউজ২৪/মোঃ আতাউর রহমান
৭ দাবিতে কুবি’র তিন দপ্তরে শিক্ষক সমিতির তালা
রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ
টেকনাফে ১০ কৃষক অপহরণের ঘটনায় আসামি দেলু ডাকাত আটক।
ডাকঘরে পোস্ট মাস্টারের আইসক্রিম ডিলারের ব্যবসা
থাইল্যান্ডে হিট স্ট্রোকে ৩০ জনের মৃত্যু
নেতানিয়াহুর পদত্যাগ চান ন্যান্সি পেলোসি
ইউক্রেন-ইসরায়েলকে আরও ৯৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র