ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া স্বত্তে ও ঝুঁকি বাড়িয়াই চলিয়াছে

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারী, ২০১৮ ১০:১৬:২৯

ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া স্বত্তে ও ঝুঁকি বাড়িয়াই চলিয়াছে

রাজধানীর পুরাতন ঢাকার লালবাগে একটি পাঁচতলা ভবন হেলিয়া পড়িয়াছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হইতে বাসিন্দাদের সরিয়া যাইতে নির্দেশনা দিয়াছে। ভবনটিতে বসবাস করা ‘নিরাপদ নয়’ শীর্ষক একটি সাইনবোর্ডও ঝোলানো হইয়াছে। লালবাগের শহীদনগরের রাজ নারায়ণ ধর রোডের এই বাড়িটি পুরাতন এমন ভাবিবার কোনো কারণ নাই। স্থানীয় জনগণের ভাষ্য অনুযায়ী ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয় গত বত্সরের শুরুতে। নির্মাণকাজ শেষ হইবার পরই ভবনটি হেলিয়া পড়ে। নূতন একটি ভবন হেলিয়া বা ধসিয়া পড়িবার খবরে বিস্মিত হইবার কিছুই নাই।

বিল্ডিং কোড না মানা, যথাযথভাবে মাটি পরীক্ষা না করা, বালু, সিমেন্ট, রড ইত্যাদি উপাদানের সংমিশ্রণ যথাযথ না হওয়া ইত্যাদি কারণে নূতন নির্মিত ভবনও ধসিয়া পড়িতে পারে। গতকাল একটি খবরে বলা হইয়াছে, টাঙ্গাইলের বাসাইলে উদ্বোধনের আগেই হেলিয়া পড়িয়াছে ব্রিজ। স্থানীয়দের অভিযোগ হইল, অনিয়মের কারণেই ব্রিজটির এই দশা হইয়াছে। তাই শুধু হেলিয়া পড়া নহে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই ধরনের নানা স্থাপনা তৈরির সময় বা ইহার অল্পকাল পরেই ভাঙিয়া পড়িবার দৃষ্টান্ত আমাদের দেশে একেবারে কম নহে।

 

বাংলাদেশ আর্থকোয়াক সোসাইটি মনে করে, মধুপুর ফল্টে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হইলে রাজধানী ঢাকার ৭০ হাজারেরও বেশি ভবন ভাঙিয়া পড়িবার আশঙ্কা আছে। কিন্তু এই বিপজ্জনক ভবনগুলি অপসারণের উদ্যোগ তো নাই-ই, উপরন্তু অচিহ্নিতও রহিয়া গিয়াছে। ২০১৩ সালের এপ্রিলে সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর ঢাকা মহানগরীর তিনশত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন যৌথভাবে চিহ্নিত করিয়াছিল রাজউক ও দুই সিটি করপোরেশন। কিন্তু ভবনগুলি অপসারণের কাজ অদৃশ্য কারণে আজও লালফিতায় বন্দি হইয়া আছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে। সমস্যা হইল, কিছু কিছু ভবন মালিক ঝুঁকি নিয়াই বসবাস করিতে চাহেন। কেহ-বা আবার ভবন ভাঙার বিরুদ্ধে আদালতেরও আশ্রয় নেন। ফলে তাহা একসময় জটিলতর রূপ ধারণ করে। কোনো দুর্ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ সামান্য নড়িয়া চড়িয়া বসিলেও ইহার কোনো স্থায়ী সমাধান হয় না। কিছুদিন পর আবারও শঙ্কায় থাকিতে হয় নূতন কোনো দুর্ঘটনার।

এখানে প্রশ্ন উঠিতে পারে, ভবন কেন ঝুঁকিপূর্ণভাবে নির্মাণ করা হইবে? ব্যক্তি মালিকানাধীন স্থাপনার ক্ষেত্রে ব্যক্তির এবং সরকারি স্থাপনার বেলায় সরকারের সংশ্লিষ্ট লোকজনের সতর্কতা অবলম্বন করাই সকলের প্রত্যাশিত। একইভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ হইবার কারণে ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হইবার ক্ষেত্রে আমাদের উচিত তাহা সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা। যাহারা এইসকল ভবনে বসবাস করেন, তাহাদেরও এই ব্যাপারে সচেতন হওয়া দরকার। অভিযোগ রহিয়াছে যে, যথাযথ অনুমোদন ছাড়াই আলোচ্য বাড়িটি নির্মিত হইয়াছে।

ইতোমধ্যে রাজউক ও সিটি করপোরেশনের লোকজন বাড়িটি পরিদর্শন করিয়াছেন। কিন্তু যখন অনুমোদন ছাড়াই এই ধরনের ভবন নির্মিত হয় তখন তাহারা কোথায় থাকেন? প্রতিবেশীরা বাড়ির মালিককে সতর্ক করিয়াছিলেন বটে, কিন্তু তিনি কাহারও কথা শোনেন নাই। এই অবস্থায় বিষয়টি রাজউক ও সিটি করপোরেশনকে জানানো ছিল তাহাদের নাগরিক দায়িত্ব। এভাবে আমরা প্রত্যেকে যদি দায়িত্বশীল ও সচেতন হই, তাহা হইলে এই সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান হইতে পারে। নতুবা একের পর এক আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করিয়াও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ঝুঁকি দূর করা যাইবে বলিয়া মনে হয় না।

প্রজন্মনিউজ২৪.কম/এ এ মাসুদ

এ সম্পর্কিত খবর

ইরানে হামলার পর নাগরিকদের ইসরায়েল ছাড়তে বলল অস্ট্রেলিয়া

মুস্তাফিজকে কেন পুরো আইপিএল খেলতে দিচ্ছে না বাংলাদেশ

খিলগাঁওয়ে পরিত্যক্ত ঘরে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ, পুলিশের ধারণা হত্যা

ছাত্রলীগ নেতার পর একই নারীর সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানের ভিডিও ভাইরাল

কণ্ঠের সুরক্ষায় ঝাল-তৈলাক্ত খাবার পরিহারের পরামর্শ

৩টি ড্রোন ধ্বংস করল ইরান, নিরাপদে আছে ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনা

আগামীকাল ফিটনেস পরীক্ষা, থাকছেন কি সাকিব?

ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, এলাকাবাসীর পিটুনিতে নিহত ২

ঈদের আমেজ কাটেনি বাজারে, ফাঁকা ঢাকাতেও দাপট গরু-খাসির

ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ