যৌতুকের জন্য মুক্তিযোদ্ধার কন্যার দুহাতে গরম রড়ের ছ্যাকা

প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০৪:৫৯:৩১

যৌতুকের জন্য মুক্তিযোদ্ধার কন্যার দুহাতে গরম রড়ের ছ্যাকা

মীরসরাইয়ে যৌতুক না পেয়ে শাশুড়ি আর বিবাহিত ননদ মিলে গৃহবধুর দু’হাত গরম রডের ছ্যাকা দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন ৬ নং ইছাখালী ইউনিয়নের চুনি মিঝির টেক গ্রামের বিলু মালের বাড়ী প্রকাশ শাহা আলম মিস্ত্রী বাড়ীতে উক্ত ঘটনা ঘটে।

নির্যাতিতার পরিবার সূত্রে জানা যায়, নির্যাতিতা রোকসানার স্বামী জাহাজে চাকুরি করেন। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও তার পরিবার বিভিন্ন ওযুহাতে রোকসানার পরিবারের কাছে ১ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে আসছে। রোকসানা এর প্রতিবাদ করলে তাকে গালাগাল ও মারধর করত। বিয়ের দু’মাস পর তাকে দেয়া ৪ ভরি স্বর্ণালংকার থেকে ২ভরি স্বর্ণ স্বামী জোরপূর্বক নিয়ে যায়, এরপরও তারা ক্ষান্ত হয় নি।

রোকসানা প্রতিবাদ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে শাশুড়ি একটি রড গরম করে রোকসানার দুই হাতে ৯টি ছ্যাকা দেয়। এসময় তার ননদ রোকসানার দুইহাত কষে ধরে রাখে। পরে রোকসানার আত্মচিৎকারে প্রতিবেশিরা এসে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে রোকসানার পরিবারের লোকজন এসে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানালে চেয়ারম্যানের নির্দেশে ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন, ৪ নং ওয়ার্ডের আবুল কালাম এবং ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য ওহিদেরনেছার উপস্থিতিতে রোকসানাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে তার পরিবার চিকিৎসার জন্য মস্তান নগর হাসপাতালে ভর্তি করান।

এঘটনায় নির্যাতিতার পক্ষে তার ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় রোকসানার স্বামী মো. আকবর ইসলাম, শশুর আবুল খায়ের, শাশুড়ি ফিরোজা বেগম এবং ননদ নার্গিস আক্তারকে আসামী করে সোমবার একটি মামলা দায়ের করেন। এবিষয়ে নির্যাতিতা রোকসানা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার উপর যে বর্বর নির্যাতন হয়েছে আমি তার সুষ্ঠ বিচার চাই। তিনি বলেন, ঘটনার সময় তার স্বামী এবং শশুর কর্মস্থলে জাহাজে ছিলেন, তবে তারা পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছেন। তাদের ইশারায় এ কাজটি হয়েছে। রোকসানা এখন মস্তান নগর হাসপাতালের ২য় তলায় ২নং বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

এই বিষয়ে মস্তানগর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাঃ অসীম কুমার বলেন এমন নির্যাতন মধ্যযুগীয় বর্বরতার মতোই। তিনি বলেন আমরা এখানে ড্রেসিং সহ বিভিন্ন চিকিৎসা অব্যাহত রেখেছি। ড্রেসিং এর পর বার্ন রিকভারীর জন্য চমেক বার্ণ ইউনিটে ও ভর্তি নিয়ে যেতে হতে পারে এই গৃহবধুকে। এবিষয়ে ৬ নং ইছাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তফা বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। পরে ৩জন মেম্বারের উপস্থিতিতে তাকে উদ্ধার করে বাবার বাড়ী পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে চিকিৎসার জন্য মস্তান নগর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বর্তমানে তার পরিবার বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছে বিষয়টি এখন থানা পুলিশ দেখছে। এবিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার এসআই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দীনেশ চন্দ্র দাশ গুপ্ত বলেন, জনৈক মিজানুর রহমান বাদী হয়ে গৃহবধু রোকসানাকে নির্যাতনের বিষয়ে মামলা দায়ের করেছে। আমি হাসপাতালে গিয়ে রোকসানার সাথে কথা বলেছি। আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।

প্রজন্মনিউজ২৪.কম/রনি/মাসফি

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ