রোহিঙ্গা নির্যাতন জাতিগত নিধনের শামিল :যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট

প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০১:২২:১৯ || পরিবর্তিত: ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০১:২২:১৯

রোহিঙ্গা নির্যাতন জাতিগত নিধনের শামিল :যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট

রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চালানো নির্যাতনকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের একটি প্রতিবেদনে।

সোমবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এই নির্যাতনের ঘটনা মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পড়ে এবং এটি গণহত্যারও শামিল। আন্তর্জাতিক আদালতে বিষয়টি উত্থাপন করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখার সুপারিশ করা হয়েছে এতে।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় কমিটি (ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি) এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ‘রাখাইন রাজ্য সংঘাত এবং যুক্তরাজ্যের ভূমিকা’ (ভায়োলেন্স ইন রাখাইন স্টেট অ্যান্ড ইউকে’স রেসপন্স) শীর্ষক এ প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলা হয়, রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিজস্ব মানদণ্ড অনুযায়ী যথার্থ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে যুক্তরাজ্য।

রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র বিভাগ এ নিয়ে কী ভূমিকা পালন করেছে তার মূল্যায়ন করতেই এই প্রতিবেদন তৈরি করে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর।

সর্বদলীয় কমিটির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্য সরকার রোহিঙ্গা পরিস্থিতির মূল্যায়নে ব্যর্থ হয়েছে। এমন ব্যর্থতা যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক ভূমিকার সঙ্গে মানানসই নয়।

পরিস্থিতি বিবেচনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকাকে অপর্যাপ্ত আখ্যায়িত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব উত্থাপক হিসেবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হওয়ার দায় যুক্তরাজ্যেরও আছে।

নিরাপত্তা পরিষদে চীনের হস্তক্ষেপে প্রস্তাব পাস না হওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলা হয়, আঞ্চলিক মিত্র ও জোটের সঙ্গে মিলে যুক্তরাজ্যের উচিত সমাধান খোঁজা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা নির্যাতনের পুরো দায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধান মিন অং লেয়িংয়ের ওপর বর্তায়। স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির নীরবতার সমালোচনা করে বলা হয়, তিনি ইতিমধ্যে নিজেকে নীতিভ্রষ্ট হিসেবে প্রমাণ করেছেন।

পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি না ঘটলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও ব্যবসার ওপর অবরোধ আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর পরিস্থিতির নিজস্ব মূল্যায়ন না করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় প্রতিবেদনে। এতে দ্রুত বিশেষজ্ঞ দল প্রেরণ করে ধর্ষণ ও সংঘাতের অভিযোগগুলোর তদন্ত এবং পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র উদ্‌ঘাটন করে কমিটির কাছে প্রতিবেদন দাখিলে পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক আদালতে বিষয়টি উত্থাপন করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখার সুপারিশ করা হয়েছে।

রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র বিভাগ এ নিয়ে কী ভূমিকা পালন করেছে তার মূল্যায়ন করতেই এই প্রতিবেদন তৈরি করে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর।

৩৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটিতে দেশটির একক ভূমিকা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যৌথ ভূমিকার বিষয়গুলো আলাদাভাবে মূল্যায়ন করা হয়।

এ ছাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য স্থায়ী ক্যাম্প প্রতিষ্ঠার বিষয়টি বাস্তবতার নিরিখে বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, এটা লোকগুলোকে আশাহীন ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেবে এবং উগ্রবাদে দীক্ষিত হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলবে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক উদাহরণ তৈরির জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করা হয় প্রতিবেদনে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে বলা হয়, বাস্তুহারা মানুষদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের কাজটি বেশ চ্যালেঞ্জের।

নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন জরুরি। জাতিসংঘের আস্থা অর্জন ব্যতীত কোনো ‍চুক্তিতে সমর্থন দেওয়া উচিত হবে না যুক্তরাজ্য সরকারের।

প্রজন্মনিউজ২৪.কম/এ এ মাসুদ

এ সম্পর্কিত খবর

গণতন্ত্রের আন্দোলন ন্যায়সঙ্গত, এ আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হবো : মির্জা ফখরুল

তালাকের হার গ্রামে বেশি, বড় কারণ পরকীয়া

ইফতার পার্টি না করে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান : প্রধানমন্ত্রী

হাবিপ্রবিতে নবম গ্রেড হতে তদুর্ধ্ব কর্মকর্তাগণের জন্য দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা

পেনশন নিয়ে প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি পবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির

রমজানে যানজট ও লোডশেডিংয়ে জনজীবনে নাভিশ্বাস

সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রোডাক্টিভ রমাদান শীর্ষক আলোচনা সভা ও গণ ইফতার

দেওয়ানগঞ্জে মেয়র এর নির্দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগ

হাবিপ্রবিতে ল্যাব টেকনিশিয়ানদের জন্য দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা

সূরা নিসায় যে দোয়া বর্ণিত হয়েছে

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ