খালি পেটে পানি পানের উপকার

প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০৯:৪৭:৩৮

খালি পেটে পানি পানের উপকার

সকালে খালি পেটে পানি পানের যত উপকারসকালে খালি পেটে পানি পানের যত উপকার

পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া আমরা বাঁচতে পারি না। প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে পানি পান করা খুবই জরুরি। তবে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে এক গ্লাস পানি পান করা শরীরের জন্য খুবই ভালো। এ অভ্যাসটি যদি আপনি রপ্ত করতে পারেন, তবে অনেক ধরনের অসুখ-বিসুখ থেকে আপনার শরীর মুক্ত থাকবে; আপনিও থাকবেন সুস্থ ও সবল।

দিনের শুরুর এই এক গ্লাস পানিকে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা 'স্বাস্থ্যকর' 'বিশুদ্ধ' 'সুন্দর' ইত্যাদি বিশেষণে বিশেষায়িত করে থাকেন। প্রশ্ন হচ্ছে: কী পানি খাবেন? ঠাণ্ডা পানি, নাকি গরম পানি? মধুমিশ্রিত পানি, নাকি হালকা নোনতা পানি?

সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে ফুটানো পানি পান করা উচিত। হালকা নোনতা পানি ভালো, কিন্তু সাধারণত প্রতিদিনই আমরা খাবার থেকে সোডিয়াম পেয়ে থাকি। তাই শরীরে এর অভাব না-হলে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ করার দরকার নেই। মধুমিশ্রিত পানি অনেকের পছন্দ। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তবে মধুমিশ্রিত পানি মানে আবার অতিরিক্ত ক্যালরি। তাই সবচে ভালো সাধারণ পানি ফুটিয়ে পান করা। আর সে পানি ঠাণ্ডাও না, গরমও না- এমন হলে ভালো। সাধারণত রাতে ঘুমের মধ্যে পানি পান করা হয় না। তখন শরীরে পানির অভাব দেখা দেয়। সকালের এক গ্লাস পানি সে অভাব পূরণ করবে। তা ছাড়া, সকালে খালি পেটে পানি খেলে আপনার প্রস্রাবও ক্লিয়ার হবে।

এখানে একটা প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। প্রশ্নটা হচ্ছে : কেন সকালে ঘুম থেকে জেগেই খালি পেটে পানি পান করতে হবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানি অন্তত চারটি উপকার করে। তাই আমাদের সকালে পানি খাওয়া উচিত এবং এটাকে অভ্যাসে পরিণত করা উচিত।

উপকারিতা ১ : সকালে খালি পেটে পানি পান করলে শরীরের পানির অভাব পূরণ হবে। রাতে ঘুমানোর সময় মানবদেহের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় পানির অভাব দেখা দেয়। আমরা সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠি এই অভাব নিয়েই। তাই, ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পানি পান করার এই পরামর্শ। এতে দ্রুতই সেই অভাব পূরণ হয়ে যায়।

উপকারিতা ২ : কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যতায় ভোগেন। তাদের জন্য সকালে উঠে খালি পেটে পানি খাওয়ার যাদুর মতো কাজ করতে পারে। আর যাদের এ সমস্যা নেই, সকালে পানি খাওয়ার অভ্যাস তাদেরকে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে রাখবে বলে আশা করা যায়।

সকালে খালি পেটে পানি পানের তিন নম্বর উপকারিতা হচ্ছে, এতে পাকস্থলির কার্যক্ষমতা বাড়ে। রাতের বেলা বিপাকপ্রক্রিয়া চলতে থাকে এবং সকাল নাগাদ এ কাজ শেষ হয়ে যায়। তখন খালি পেটে এক গ্লাস পানি পাকস্থলিকে সক্রিয় করে তুলতে ভূমিকা রাখে। আবার এতে পাকস্থলির ওপর না-হক চাপও পড়ে না।

সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার চার নম্বর উপকারিতা হচ্ছে, এতে মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে অধিক সচল হয়। কীভাবে? আমরা জানি রক্তের একটা বড় অংশই পানি। আর পানি পান করলে তা আমাদের রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে ভূমিকা রাখে। আর রক্ত প্রবাহ ঠিক থাকলে, মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে এবং এর ফলে মস্তিষ্ক অধিক সচল হয়।

সকালে ঘুম থেকে উঠে পানি পানের উপকারিতা নিয়ে এতক্ষণ আলোচনা করলাম। আগের অনুষ্ঠানে প্রতিদিন কতটুকু পানি পান করবেন, কখন করবেন, কীভাবে করবেন--এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। এখন এ সম্পর্কে আরেকটু বিস্তারিত আলোচনা করতে চাই। আশা করি, এর মাধ্যমে আপনারা উপকৃত হবেন।

প্রতিদিন ঘুমোতে যাওয়ার আগে পানি পানের অভ্যাস আছে কি? অনেকে মনে করেন, রাতে শোয়ার আগে পানি পান না-করাই ভালো। আসলে, বিষয়টা ঠিক উল্টো। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও পরিমিত পানি পান করা উচিত।

সকালে ঘুম থেকে উঠে পানি পান করার বিশেষ উপকারিতা সম্পর্কে একটি ধারণা প্রচলিত আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু সকালে নয়, সারাদিনই প্রয়োজন অনুসারে পানি পান করতে হবে, একটু একটু করে। রাতে শোয়ার আগে ৫০ থেকে ২০০ মিলিলিটার পর্যন্ত পানি পান করতে বলেন তাঁরা। শোয়ার আগে এর চেয়ে বেশি পানি না-পান করাই ভালো। কারণ, তাতে ঘুমের গুণগত মান কমে যায়।

এখন প্রশ্ন হতে পারে, সুস্থতার জন্য প্রতিদিন কতটুকু পানি পান করা উচিত? হ্যাঁ, এই প্রশ্নের উত্তর একেক জন একেক রকমভাবে দিয়ে থাকেন। তবে, সবচেয়ে প্রচলিত উত্তরটি হচ্ছে : অন্তত ২০০০ মিলিলিটার। আধুনিক চিকিৎসকরা অবশ্য ১২০০ মিলিলিটারেই সন্তুষ্ট। তারা বলেছেন, এ পানি পান করতে হবে সারাদিন ধরে, একটু একটু করে। 'একটু একটু করে' বলতে তারা বুঝিয়েছেন ১০০ থেকে ২০০ মিলিলিটার করে।

অবশ্য, ঋতু ও পরিবেশভেদে পানিগ্রহণের পরিমাণ বাড়াতে হতে পারে। যেমন, গরমকালে যদি বেশি ঘাম হয়, তবে আপনার শরীরের পানির চাহিদা ২০০০ থেকে ৩০০০ মিলিমিটার হতে পারে। শরীরচর্চার ফলে শরীর থেকে প্রচুর ঘাম ঝরলেও পানি বেশি খেতে হতে পারে। আবার শীতকালে ১২০০ থেকে ১৫০০ মিলিলিটার পানিই অধিকাংশ ক্ষেত্রে যথেষ্ট।

আরেকটি কথা, যাদের কিডনিতে পাথর হয়েছে, বা যারা উচ্চ কলেস্টেরলের রোগী, তাদের সব ঋতুতেই প্রতিদিন অন্তত ২০০০ মিলিলিটার করে পানি পান করা উচিত। এক্ষেত্রে পানিটুকু খেতে হবে সারা দিন ধরে, একটু একটু করে।

প্রজন্মনিউজ২৪.কম/এ এ মাসুদ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined index: category

Filename: blog/details.php

Line Number: 417

Backtrace:

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত



ব্রেকিং নিউজ