প্রতিবন্ধীদের জন্য খেলার মাঠ স্পিকারের সাড়ার অপেক্ষায়

প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর, ২০১৭ ১১:৩০:১৯

প্রতিবন্ধীদের জন্য খেলার মাঠ স্পিকারের সাড়ার অপেক্ষায়

স্পিকারের সাড়ার অপেক্ষায় আটকে আছে প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া দেশের একমাত্র খেলার মাঠের নির্মাণ কাজ। জাতীয় সংসদ ভবনের পশ্চিম পাশে আসাদ গেট সংলগ্ন ৪ দশমকি ১৬ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত মাঠটির বিভিন্ন স্থান এখনও উঁচু-নিচু আর ঝোঁপ-জঙ্গলে ভরে আছে। শুধু দৃশ্যমান একটি সাইনবোর্ড ছাড়া মাঠের কোথাও উন্নয়ন কাজের ছোঁয়া লাগেনি। কর্তৃপক্ষের দাবি, মাঠটির নকশা ও প্রাক্কলের বিষয়ে স্পিকারের কাছে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। তার ইতিবাচক সাড়ার অপেক্ষায় নির্মাণ কাজ আটকে আছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এ মাঠের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে। ফাউন্ডেশন সূত্র জানিয়েছে, ২০১১ সালের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ গঠনের লক্ষ্যে একটি খেলার মাঠ নির্মাণের অঙ্গীকার করেন। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মাঠের উন্নয়ন কাজের জন্য একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়। এরপর মাঠের সংস্কার ও মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়। শুরু করা হয় মাঠের আগাছা ও ঝোঁপ-জঙ্গল অপসারণ কাজ। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই তা আটকে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মুহাম্মদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্ধ দেওয়া জায়গাটির নকশা ও প্রাক্কলনের জন্য আমরা স্থাপত্য অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু জায়গাটি যেহেতু জাতীয় সাংসদের মূল নকশার আওতায় রয়েছে সেহেতু সেখানে কোনও উন্নয়ন কাজ করতে হলে স্পিকারের অনুমোদন লাগে। সেজন্য স্থাপত্য অধিদপ্তর স্পিকারের কাছে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু স্পিকারের দফতর থেকে এখনও চিঠির উত্তর আসেনি। সে কারণে বিষয়টি এখন আটকে আছে। স্পিকারের অনুমোদন বা নির্দেশনা পেলেই মাঠের উন্নয়ন কাজ হাতে নেওয়া হবে। কিন্তু সংসদ ভবনের মূল নকশার বাইরে কোনও কিছু করার সুযোগও নেই।’ সে কারণে হয়ত বিষয়টি আটকে থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।

একই কর্মকর্তা আরও জানান, মাঠের ব্যবহার সম্পর্কে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও পরিকল্পনা হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে মাঠে প্রতিবন্ধীদের জন্য টয়লেট নির্মাণ, মাঠের পাশে হুইল চেয়ার বসানো, অভিভাবকদের বসার জায়গা, মাঠে প্রবেশের নিরাপদ দরজাসহ পরিবেশবান্ধব অন্যান্য আধুনিক বিষয়াদি যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পর চলতি বছরের শুরুতেই মাঠটি উন্নয়নে যে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছিল তাকে স্বাগত জানিয়ে মানববন্ধন করেছিল ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন কোনও প্রতিশ্রুতি দেন তখন তা বাস্তবায়ন করা অধীনস্থ অফিসগুলোর দায়িত্ব। কিন্তু এরপরও বিভিন্ন সিস্টেম ও জটিলতার কারণে তা আটকে যায়। এখানে বিষয়টি হচ্ছে জায়গাটি সংসদ ভবনের মূল নকশার মধ্যে হলেও তাতে তো কোনও স্থাপনা নির্মাণ হবে না। খেলার মাঠ নির্মাণ করতে স্থাপনার প্রয়োজন কেন? মাঠ তো সবুজ হবে। সে কাজ করতে গেলে স্থাপনা বা সংসদ ভবনের মূল নকশার ব্যত্যয় ঘটবে না। এখন কাজটা শুধু ডিমার্গেশন করে মাঠকে প্রতিবন্ধী উপযোগী করে তৈরি করে নেওয়া।’

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা উত্তর এই স্থানটিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য তিনতলা একটি স্কুল ছিল। সংসদ ভবন করার সময় তা ভেঙে ফেলা হয়। এতে প্রতিবন্ধীদের অধিকার রয়েছে। আমাদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব মাঠটি প্রতিবন্ধীদের উপযোগী করে তৈরি করে সেটি উন্মুক্ত করে দেওয়া।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ